man's search for meaning Bangla translation

Man’s Search for Meaning Bangla-ম্যান্স সার্চ ফর মিনিং জীবন বদলে দেওয়া Inspiring বইয়ের বাংলা অনুবাদ 2023

  • Post author:
  • Post last modified:24 January 2024

Last updated on January 24th, 2024 at 02:19 pm

ডাক্তার জে. এর একটি ঘটনা উল্লেখ করছি। আমার পুরো জীবনে সাক্ষাৎ পাওয়া সকল মানুষের মধ্যে তিনি ছিলেন কেবণমাত্র মানুষ যাকে আমি একজন ম্যাফিস্টোফেলিয়ান (শয়তানিক অবয়ব) বা মন্দ সত্ত্বা ডাকতে সাহক করি। সে সময়টাতে তাকে সাধারণভাবে “স্টেইনফের গণ-হত্যাকারী” (স্টেইনফ-ভিয়েনার বৃহৎ মানসিক হাসপাতাল) হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছিল। নাৎসি বাহিনী যখন তাদের ইউথেইনেযিয়া (euthanasia) কর্মসূচি শুরু করেছিল তখন তিনি তার হাতে সমস্ত ক্ষমতা ধরে রেখেছিলেন এবং তিনি তার নিযুক্ত কাজে এতই কট্টর ছিলেন যে তিনি চেষ্টা করেছিলেন যেন কোনো মনোব্যাধিগ্রস্ত ব্যক্তি গ্যাস চেম্বার থেকে পালিয়ে না যায়। যুদ্ধের পর, আমি যখন ভিয়েনায় চলে এসেছিলাম তখন আমি ডাক্তার জে. কে কি ঘটেছিল সে বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলাম।“রাশিয়ানদের দ্বারা তাকে স্টেইনফের এক নির্জন কক্ষে আমাকে বন্দী করা হয়েছিল”, সে আমাকে বলেছিল। পরের দিন যদিও তার কক্ষের দরজাটি খোলা অবস্থায় পাওয়া যায় এবং ডাক্তার জে. যাকে আর কখনও পুণরায় দেখা যায় নি”। পরে আমি বুঝেতে পেরেছিলাম যে, অন্যান্যদের ন্যায়, তার সহকর্মিদের সহযোগিতায় সে দক্ষিন আমেরিকায় চলে যায়। আরও সম্প্রতি, যদিও, যাকে ইউরোপকে দু’ভাগে ভাগ করা রাজনৈতিক সীমানার পূর্ব দিকে বহু বছর ধরে কারাবন্দী থাকা এক সাবেক অস্ট্রিয়ান কুটনৈকিত আমার সাথে পরামর্শ করেন, প্রথমে তিনি সাইবেরিয়া এবং তারপর মস্কোর বিখ্যাত লুবিয়াঙ্কা জেলে বন্দী ছিলেন।  আমি যখন তাকে স্নায়বিকভাবে পরীক্ষা করছিলা, তিনি হঠাৎ করে আমি ডাক্তার জে. কে চিনি কিনা জিজ্ঞেস করলেন। আমার হ্যাঁ সুচক জবাবের পর তিনি বলতে থাকলেন: “তার সাথে আমার পরিচয় হয় লুবিয়াঙ্কা জেলে। সেখানে চল্লিশ বছর বয়সে মূত্রথলির ক্যান্সারে তিনি মারা যান। যদিও, তার মৃত্যুর পূর্বে তিনি নিজেকে শ্রেষ্ঠ কমরেড হিসেবে প্রমান করে গিয়েছেন! তিনি সবাইকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন। সর্বোচ্চ অনুমেয় নৈতিক মানদণ্ডে জীবন-যাপন করেছিলেন। আমার দীর্ঘ কারাবাসে তাকেই আমি বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে পায়”!

এটাই ডাক্তার জে. সম্পর্কে কাহিনী, যাকে মানুষ “স্টেইনফের গণ-হত্যাকারী” হিসেবে চিনতো। কিভাবে আমরা মানুষের আচরণের ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারি? আমরা হয়তো কোনো ইঞ্জিনের, যন্ত্রমানবের গতিবিধির ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারি; তার চেয়েও অধিক আমরা এমনকি ভবিষ্যদ্বাণী করতে চেষ্টা করি মানুষের মনের নির্মাণকৌশল বা “গতিশীলতা” বা dynamism সম্পর্কে। কিন্তু মানুষতো মনের চেয়েও বেশী কিছু।

যাইহোক, স্বাধীনতা বা মুক্তি কিন্তু শেষ কথা নয়। স্বাধীনতা কেবল গল্পের অংশ ও অর্ধেক সত্য। স্বাধীনতা সমস্ত ঘটনার নেতিবাচক দিক ব্যতীত আর কিছুই নয় যার ইতিবাচক দিক হলো দায়বদ্ধতা। বস্তুত, স্বাধীনতা  নিছক স্বেচ্ছাচারিতায় পর্যবসিত হওয়ার বিপদ আছে যদি না তা দায়বদ্ধতার শর্তে বেঁচে থেকেছে। তাই আমি পূর্ব উপকুলের স্বাধীনতা স্তম্ভ বা স্টেচু অভ নিবার্টি’কে পশ্চিম উপকূলের দায়বদ্ধতার স্তম্ভ বা স্টেচু অভ রেসপন্সেবিলিটি’র মাধ্যমে সম্পূরণ করার সপক্ষে কথা বলি।

মনঃচিকিৎসাগত  মতবাদ THE PSYCHIATRIC CREDO

একজন মানুষকে নিয়ন্ত্রন করার মাধ্যমে একেবারে স্বাধীনতাহীন করে দিয়ে যাবে এমন অনুমেয় কিছুই নাই। তাই, তা যতই সীমিত হোক না কেনো স্বাধীনতার একটি অবশিষ্ট অংশ একজন স্নায়ুবৈকল্য কিম্বা এমনকি মনোব্যাধিগ্রস্ত মানুষের কাছে রয়ে যায়। আসলে, রোগীর গভীরতম অংশটি কিন্তু এমনকি কোনো মনোবৈকল্য দ্বারা স্পর্শিত হয় না। এক দুরারোগ্য মনোবৈকল্যগ্রস্ত ব্যক্তি সম্ভবত তার উপযোগিতা হারাতে পারে কিন্তু তবুও সে একজন মানুষের আত্ম-মর্যাদা ধরে রাখতে পারে। আর এটিই হলো মনঃচিকিৎসাগত  মতবাদ। এটি ব্যতীত একজন মনঃচিকিৎসক হওয়ার কোনো যোগ্যতা আছে বলে আমি মনে করি না। কার নিমিত্বে? কেবলই কি অসংস্কারযোগ্য এক ক্ষতিগ্রস্ত মস্তিষ্ক ইঞ্জিনের নিমিত্ত্বে? রোগী যদি স্পষ্টতই বেশি না হতো, তাহলে ইউথেনেইযিয়াকে সমর্থন দেওয়া হতো।

পূণর্মানবিকৃত মনঃচিকিৎসা (PSYCHIATRY REHUMANIZED)

দীর্ঘ সময় ধরে – বস্তু অর্ধ শতাব্দি ধরে – মানষের মনকে মনোচিকিৎসা নিছক এক নির্মাণকৌশল হিসেবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছে, আর ফলশ্রুতিতে মানসিক রোগের থেরাপি বা চিকিৎসাকে কেবল এক পদ্ধতি নির্ভর হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি এই স্বপ্ন দেখা হয়ে গিয়েছে। দিগন্তে এখন যা আভির্ভুত হতে শুরু করেছে তা কোনো এক মনস্তত্ত্বকৃত ওষুধ নয় বরং তা হলো পূণর্মানবিককৃত মনঃচিকিৎসা।

একজন ডাক্তার, যাইহোক, যে তারপরও তার নিজের ভুমিকাকে বিশেষভাবে একজন প্রকৌশলী বা যন্ত্রকারিগর এর ভুমিকায় ব্যাখ্যা করে সে স্বীকার যে, সে রোগীকে রোগের পেছনে একজন মানুষকে দেখার পরিবর্তে এক যন্ত্রের চেয়ে বেশি কিছু দেখে না!

একজন মানুষ কখনও অন্যান্য বস্তুর মধ্যে একটি বস্তু নয়; বস্তুরা একে অন্যকে নির্ধার করে, কিন্তু মানুষ  চুড়ান্তভাবে আত্ম-নির্ধারণকারী। সে যা হয়ে উঠে – জন্মগত গুণ আর পরিবেশের পরিধির ভেতরে – তা সে নিজের মধ্য থেকে নির্মাণ করে। বন্দী শিবিরের, উদহারণ সরূপ, এই জীবন্ত পরীক্ষাগারে ও এই পরীক্ষা ক্ষেত্রে, আমরা দেখেছি ও তার সাক্ষি রয়েছি কিভাবে আমাদের কোনো কোনো সহকর্মি শুকরের মতো আচরণ করেছিল, আর অন্য কেউ কেউ আচরণ করেছিল পীরের ন্যায়। মানুষ তার নিজের মাঝে উভয় বৈশিষ্টই ধারণ করে; কোন্ বৈশিষ্টটি বাস্তবায়ন করা হবে তা নির্ভর করে সিদ্ধান্তের উপর কিন্তু কোনো পরিস্থিতির উপর নয়।

আমাদের প্রজন্ম বাস্তববাদি, কারণ আমরা একজন মানুষকে সে আসলেই কি জানতে পেরেছি। সর্বোপরি, মানুষই হলো সেই স্বত্বা যে অশউইৎয এর গ্যাস চেম্বার উদ্ভাবন করেছে; তথাপি, সমুন্নত শীরে প্রভুর প্রার্থনা বা শ্যামা ইসরাইল মুখে যারা সেই গ্যাস চেম্বারে প্রবেশ করেছে তারাও সে একই স্বত্বা।

Romzanul Islam

Thinking out of the convention and moving forward with knowledge and reasons are always my styles. Researching, watching the best films, and reading and collecting the best books to enrich me is my deadly passion. Stoicism, liberalism, feminism and aversion to material success are my ideals.